শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

শ্রেণিকক্ষ সংকট, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

শ্রেণিকক্ষ সংকট, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

স্বদেশ ডেস্ক:

শ্রেণিকক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে পাঠ গ্রহণ করতে হয় গাজীপুরের শ্রীপুরে হাজী আব্দুল কাদের প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও অনেক শ্রেণিকক্ষে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী অংশ নেওয়ায় পাঠদানে ব্যাহত হওয়ার কথা বলছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি বিদ্যালয় খোলা হলে এ পরিস্থিতি দেখা দেয়।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গোসিঙ্গা হায়াতখারচালা এলাকায় প্রান্তিক মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতে ১৯৭০ সালে এ বিদ্যালয় গড়ে তুলে স্থানীয় হিতৌষীগণ। পরে ১৯৮৬ সালে এমপিওভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি। আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকার হাজারো মানুষের ভরসা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার গুনগতমান ভালো থাকায় দূর হতেও শিক্ষার্থীরা পাঠদানে অংশ নিতে আসেন। সরকারিভাবে ২০১৫ সালে একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ৮২৯ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে পাঠদানে অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের মাঠে গ্রুপ ক্লাসে অংশ নিতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মনযোগে ঘাটতিসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়।

উপজেলার মধ্যে বিদ্যালয়টি অনেক সুনাম কুড়িয়েছে। এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার বিষয়ে সচেতন শিক্ষকরা। পাশাপাশি বৃক্ষরোপনের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ তৈরির বিষয়ে নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে বিদ্যালয়টি পুরোপুরি ডিজিটাইলাইজেশন করা হয়েছে। এতো কিছুর পরও প্রধান প্রতিবন্ধকতা শ্রেণিকক্ষ সংকট।

বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজন মিয়া বলেন, ‘আমাদের তিনজনের বেঞ্চে ছয়জনকে বসতে হয়। গরমে আমাদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি পাঠ গ্রহণেও আমাদের খুব সমস্যা হয়। আমাদের একটি স্বাভাবিক শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন।’

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাকলী আক্তার বলেন, ‘আমাদের মাঠে ক্লাস হয়। তপ্ত রোদে আবার গাছের ছায়ায় যেতে হয়। শ্রেণিকক্ষের বাহিরে পাঠদানে আমাদের মনযোগে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।’

এসএসসি পরীক্ষার্থী জাহিদের ভাষ্য, ‘মাঠের পাঠদানে অংশ নিতে বেশিরভাগ সময় দৃষ্টি অন্যদিকে চলে যায়। সঙ্গে মাঠে বসে ঠিকমতো আমরা লিখতেও পারি না। অনেকটা অমানবিক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। আগামী বর্ষার আগেই এমন অচলাবস্থার নিরসন চাই।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের ভাষ্য, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের আমরা জানিয়েছি। আগামী বর্ষার আগে পাঠদানের স্বাভাবিক কার্যক্রম নিশ্চিতে অস্থায়ীভাবে কিছু শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা প্রয়োজন। সে অর্থ আমাদের নেই।’

শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মাঠে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি সত্যিই হতাশার। আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’

গাজীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘পাঠদানের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ খুব দ্রুতই প্রয়োজন। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। আশা করছি খুব দ্রুতই শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পারবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877